উত্তর: বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ তথ্যের জন্য ইন্টারনেটের
ওপর নির্ভর করে। আর ইন্টারনেট নির্ভর করে নেটওয়ার্কের উপর। নেটওয়ার্ক দিয়ে যেহেতু সবাই
সবার সাথে যুক্ত, তাই কিছু অসাধু মানুষ এই নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে যেখানে তার যাওয়ার
কথা নয় সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করে। যে তথ্যগুলো কোনো কারণে গোপন রাখা হয়েছে, সেগুলো
দেখার চেষ্টা করে। যারা নেটওয়ার্ক তৈরি করিয়েছেন, তারা সব সময়ই চেষ্টা করেন কেউ যেন
সেটা করতে না পারে। প্রত্যেকটা নেটওয়ার্কের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে, যাতে কেউ
যেন সেই নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতে না পারে। নিরাপত্তার এই অদৃশ্য দেয়ালকে
ফায়ারওয়াল বলা হয়।
২।হ্যাকিং
সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর:হ্যাকিং
হচ্ছে নেটওয়ার্কের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস করে উক্ত নেটওয়ার্ক ব্যবাহরকারীর
অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে প্রবেশ করা। অসাধু মানুষেরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোন নেটওয়ার্কের
নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস করে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ
করে এবং অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত গোপন তথ্য দেখে, তথ্য সরিয়ে নেয়া কিংবা অনেক সময় তথ্য
নষ্ট করে দেয় তাকে হ্যাকিং বলে।
ইানাবিধ
কারণে হ্যাকিং করে থাকে হ্যাকাররা। এর মধ্যে টাকা কামানো, প্রতিবাদ কিংবা চ্যালেঞ্জ
করার বিষয়ও রয়েছে।
কিছু
মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন ব্যবহারকারীর কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক হ্যাকিং করে
থাকে। হ্যাকার কম্পিউটার সিস্টেমের নিরাপত্তা ধ্বসং করে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে,গুরুত্বপূর্ণ
হিসাব নিকাশ উম্মুক্ত করে।
বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে হ্যাকিং কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশেও এটি একটি অপরাধ। তথ্য
ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৯ অনুসারে হ্যাকিংয়ের জন্য ৩ থেকে ৭ বছরের কারাদন্ডের বিধান
রয়েছে।
৩।ম্যালওয়্যার
সম্পর্কে লিখ।
উত্তর:ম্যালওয়্যার
একটি ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম বা সফ্টওয়্যার যা কম্পিউটারে ব্যবহৃত অন্য সফ্টওয়্যারগুলোর
কাঙ্কিত কর্ম সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে।
যে
সকল কম্পিউটার সিস্টেমে সফ্টওয়্যার নিরাপত্তার ব্যবস্থার ত্রুটি থাকে, সেসব ক্ষেত্রে
ম্যালওয়্যার তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। কেবল নিরাপত্তা ত্রুটি নয় ডিজাইনে গলদ কিংবা ভুল
থাকলে ও সফ্টওয়্যারটিকে অকার্যকর করার জন্য ম্যালওয়্যার তৈরি কার সম্ভব হয়। বর্তমানে
বিশ্বে প্রচলিত অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ম্যালওয়্যার এর
সংখ্যা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের ম্যালওয়্যার সংখ্যা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের
তুলনায় বেশি। এর একটি কারণ বিশ্বে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। উইন্ডোজ
অপারেটিং
সিস্টেমের ভেতরের খবর কেউ জানেনা। কাজে কোনো ভুল বা গলদ কেউ বের করতে পারলে সে সেটিকে
ব্যবহার করে ম্যালও্যার তৈরি করতে পারে। ইন্টারনেটের
বিকাশের আগে ম্যালওয়্যারের সংখ্যা খুবই কম ছিল। যখন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ম্যালওয়্যারকে
ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, তখন থেকেই ম্যালওয়্যারে সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪।কম্পিউটার
ভাইরাস কী? কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো কী কী?
উত্তর:কম্পিউটার
ভাইরাস হলো এক ধরনের ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার বা ম্যালওয়্যার যা পুনরুৎপাদন সক্ষম এবং
এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে সংক্রামিক হতে পারে।
কম্পিউটার
ভাইরাস আক্রান্ত হওয়অর লক্ষণগুলো হলো:
- কম্পিউটারের গতি কমে যাওয়া
- কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যাওয়া
- কম্পিউটার ঘন ঘন রিবুট হওয়া
- অনাকাঙক্ষিত বার্তা দেখায়।
- ফ্ইালের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়
- কম্পিউটারের বিভিন্ন আইকোন পরিবর্তন হযে যায়।
৫।কম্পিউটার
ভাইরাস কত প্রকার ও কী কী ? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর:কম্পিউটার
ভাইরাস ২ প্রকার:
১। নিবাসী ভাইরাস
২। অনিবাসী ভাইরাস
নিবাসী ভাইরাস: নিবাসী ভাইরাস হলো একধরনের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম
যা সক্রিয় হয়ে ওঠার পর মেমোরিতে স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয় এবং যখনই অন্য কোনো প্রোগ্রাম
চালু হয় তখনই সেই প্রোগ্রামকে সংক্রামিত করে।
অনিবাসী ভাইরাস: অনিবাসী ভাইরাস হলো এক ধরনের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম
যা সক্রিয় হয়ে ওঠার পর, অন্যান্য কোন কোন প্রোগ্রামকে সংক্রামণ করা যায় সেটি খুঁজে
বের করে,সংক্রামণ করার পর মূল প্রোগ্রামের কাছে নিয়ন্ত্রণ দিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
৬।বিভিন্ন
প্রকার হ্যাকার সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর:হ্যাকার
তিন প্রকার:
- হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার
- ব্লাক হ্যাট হ্যাকার
- গ্রে হ্যাট হ্যাকার
হোয়াইট
হ্যাট হ্যাকার: যে সকল হ্যাকার কোনো সিস্টেমের
উন্নতির জন্য উক্ত সিস্টেমের নিরাপত্তা ত্রুটি সমূহ খুঁজে বের করে তাকে এথিক্যাল হ্যাকার
বা হোয়াইট হ্যাক হ্যাকার বলে।
ব্ল্যাক
হ্যাট হ্যাকার: ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারের কাজ হচ্ছে অবৈধভাবে কোনো ব্যবহারকারীর কম্পিউটার
সিস্টেমে বা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে অসৎ উদ্দেশ্য সাধন করা।
গ্রে
হ্যাট হ্যাকার: গ্রে হ্যাট হ্যাকার হচ্ছে হোয়াট হ্যাট হ্যাকার এবং ব্লাক হ্যাট হ্যাকারের
মাঝামাঝি পর্যায়ভুক্ত। এই ধরনের হ্যাকাররা কখনও হ্যাকিং করে ভালো করার উদ্দেশ্যে আবার
কখনও কখনও হ্যাকিং করে থাকে ব্যবহারকারীর ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে।
৭।www.infocom.gov.bd ওয়েবসাইটটির নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠানটির কার্যপদ্ধতি
ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:www.infocom.gov.bd ওয়েব অ্যাড্রেসটি বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের কোনো প্রতিষ্ঠান
তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানালে উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো জনগণ যদি তথ্য কমিশনে
অভিযোগ করে তাহলে তথ্য কমিশন বিষয়টি তদারক করার ক্ষমতা রাখে। জনগণের অভিযোগ সঠিক হলে
তথ্য কমিশন উক্ত কোম্পানিকে আইন অনুযায়ী তথ্য দিতে বাধ্য করতে পারেন। উক্ত কোম্পানি
তারপর ও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানালে তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ
ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানকে সরকারের রেজিস্ট্রি বোর্ডে কালো তালিকাভূক্ত করতে
পারেন। এর ফলে সকল প্রতিষ্ঠান যেমন তথ্য দিতে বাধ্য থাকে তেমনি তথ্যগুলো যেন সঠিক ও
নির্ভূল হয় সেইদিকে বিশেষ নজর রাখে।
৮।স্প্যাম
সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর: স্প্যাম হলো যন্ত্রদিয়ে তৈরি করা অপ্রয়োজনীয় , উদ্দেশ্যমূলক
বা আপত্তিকর ই-মেইল যা প্রতি মুহুর্তে ই-মেইল ভ্যবহারকারীর ইনবক্সে পাঠানো হচ্ছে। যন্ত্র
দিয়ে তৈরি করা হয় বলে প্রতি মুহুর্তে লক্ষ লক্ষ স্প্যাম ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে
স্প্যামের আঘাত থেকে ই মেইল ব্যবহারকারীগণ নানা ধরনের প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিতে গিয়ে
অনেক সময় এবং সম্পদের অপচয় করতে বাধ্য হচ্ছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন