শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার - পঞ্চম অধ্যায়



১।জিপিএস সম্পর্কে বর্ণনা কর।
উত্তর: জিপিএস (GPS) হলো (Global Positioning System) এর সংক্ষিপ্ত রুপ। এর সাহায্যে পৃথিবীর যে কোন অবস্থান সম্পর্কে নিখুঁতভাবে জানা যায়। এই জিপিএস সিস্টেমটি এখন সব স্মাটফোনেই লাগানো থাকে। তাই ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে কখন কোন পথে যেতে হবে কিংবা প্রতিষ্ঠানটি কোথায় কিংবা কোন দোকানপাট কোথায় সবকিছু  স্মার্টফোনেই পাওয়া যায়। নতুন প্রায় সব গাড়িতে পথ দেখানোর জন্য জিপিএস লাগানো থাকে। তাই জিপিএস যুক্ত গাড়ি ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন যেকোনো স্থানে যাওয়া যায়।

২।ইন্টারনেট বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: একটি কম্পিউটারের সাথে অন্য এক বা একাধিক কম্পিউটারকে যুক্ত করলে নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। আর একটি নেটওয়ার্কের সাথে অন্য এক বা একাধিক নেটওয়ার্কের সংযোগ গড়ে ওঠে ইন্টারনেট। নেটয়ার্ক সাধারণত সীমিত পরিসরে হয়। কিন্তু ইন্টারনেটের পরিধি ব্যাপক। ইন্টারনেট এমন একটি প্রযুক্তি যেটি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসে সারা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করা যায়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি অন্যতম উপাদান হলো ইন্টারনেট।

৩।দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ইন্টারনেটের ব্যবহার সংক্ষেপে লেখ।
 উত্তর: দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা সমাধানের প্রথম হাতিয়ার হচ্ছে তথ্য। ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেটি ব্যবহার করে অনেক সমস্যাকে সমাধান করা যায়। এজন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজতে নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে হয়। বিশ্বের জনপ্রিয় তথ্য খোঁজার সাইট বা সার্চ ইঞ্জিনের অন্যতম হলো গুগল। (www.Google.com)  এতে বাংলা ও ইংরেজী ভাষাতে তথ্য খুঁজে বের করা যায়।
বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি বিদগণও একটি বাংলা সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেছেন, যার নাম পিপীলিকা। (www.pipilika.com) এর মাধ্যমে বাংলাতে তথ্য খোঁজা যায়। শিক্ষার্থীদের নানান সমস্যা সমাধানের জন্য ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীদের নানান সমস্যা সমাধানের জন্য ইন্টারনেটে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে। ইন্টারনেটের কেবল তথ্য প্রাপ্তিতে সহায়তা করে এমন নয় বরং কারো তথ্য প্রকাশেও সমানভাবে সহায়তা করে।  ফলে অনেকেই তাদের সমস্যা সমাধানের অভিজ্ঞতা নিজেদের ওয়েবসাইট, ব্লগ বা সামাজিক যোগাযোগের সাইটে প্রকাশ করেন।

৪।ওয়েব ব্রাউজ ও ইন্টারনেট ব্রাউজ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: ওয়েব ব্রাউজার হলো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) রিসোর্স থেকে তথ্য খুজে বের করা, উপস্থাপন করা এবং সংরক্ষণ করার একটি অ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার । ওয়েব ব্রাউজার সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা হয়।
ইন্টারনেট ব্রাউজ: ইন্টারনেট ব্রাউজ হলো ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেজে পরিভ্রমন অর্থাৎ ওয়েবসাইটের এক পেজ থেকে অন্য পেজে, এক সাইট থেকে অন্য সাইটে গমণকে ইন্টারনেটে ব্রাউজ বলে।

৫।ই-মেইল কী? ই-মেইল ব্যবহার করার পূর্বশর্তগুলো কী কী?
উত্তর: ই-মেইল কথাটির মানে হলো ইলেক্ট্রনিক মেইল বা ইলেক্ট্রনিক চিঠি। ই-মেইল হলো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে একটি আইসিটি যন্ত্র থেকে অন্য আইসিটি যন্ত্রে তথ্য আদানপ্রদানে ব্যবস্থা । ই-মেইল করে টেক্সট বার্তার সাথে কম্পিউটার ফাইল ও পাঠানো যায়।
যে কোনো কম্পিউটারেই ই-মেইল ব্যবহার করার পূর্বশর্ত হলো-
ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার/ আইসিটি যন্ত্র
ব্যবহারকারীর ই-মেইল অ্যাকাউন্ট
ই-মেইল সফ্টওয়্যার/ইন্টারনেট ব্রাউজার

৬।ফেসবুক সম্পর্কে লেখ।
উত্তর:বর্তমান বিশে^ সর্বাধিক আলোচিত বিষয় হলো ফেসবুক। বর্তমানে যতগুলো সামাজিক নেটওয়ার্ক আছে তার মধ্যে ফেসবুক হলো অন্যতম। একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এ নেটওয়ার্কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ নেটওয়ার্কটির কল্যানে আমরা হাজার মাইল দূরে থেকেও খুবই ঘনিষ্ঠভাবে প্রতি মুহুর্তে যোগাযোগ রাখতে পারছি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তথ্য বিনিময় করে , ছবি, ভিডিও বিনিময় করে,কথাবার্তা বলে কিংবা বিশেষ কোনো একটা বিষয়ক আলোচনা করতে পারে। মনে হয় যেন ফেসবুক আমাদের সমাজজীবনের একটি অংশ।

৭।ই-মেইল ঠিকানা খোলার পদ্ধতি বর্ণনা কর।
উত্তর: ই-মেইল ঠিকানা খুলতে প্রথমেই আমাদেরকে ঠিক করতে হবে কোন ই-মেইল সেবাদাতার মাধ্যমে ই-মেইল ঠিকানা খুলব। ওয়েবে অনেকগুলো ই-মেইল খোলার সাইট রয়েছে। যেমন: Yahoo.mail, Gmail ইত্যাদি সার্ভিস। এসব সাইটে ই-মেইল ঠিকানা খুলতে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে হবে। কম্পিউটারের ব্রাউজারটি চালু করে পছন্দের সেবাদাতা সাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে।
সব সাইটে প্রবেশের পর আমাদেও নতুন ই-মেইল ঠিকানা Account খুলতে সাইন আপ বা নিবন্ধন করতে হবে। এ সাইন আপের নিয়ম সব সাইটে কিছুটা ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় একই সব সাইটেই একটা ফর্ম পূরণ করতে হয়।
ফর্ম পূরণের পর সাইটটির নির্দেশনা অনুসরণ করে শেষে Create account এ ক্লিক করলেই হয়ে গেল ই-মেইল একাউন্ট বা ঠিকানা। আইডি (ID)  এবং পাসওয়ার্ড (Password) গোপনীয়ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় যে কেউ একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে। ই-মেইল ঠিকানা খুলতে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে হবে। তবে ই-মেইলে বাংলাতেও চিঠি আদান প্রদান করা যায়।

৮।মোবাইল ফোনকে স্মার্টফোন বলা হয় কেন সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: বর্তমানে মোবাইল ফোনকে স্মার্টফোন বলা হচ্ছে তার বেশ কিছু কারণ আছে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মোবাইল ফোন দিয়ে এখন অনেক ধরনের কাজ করা হচ্ছে। একসময় মোবাইল দিয়ে শুধু কথা বলা যেত। এখন মোবাইল দিয়ে গান শোনাযাচ্ছে , ছবি তোলা যাচ্ছে, ভিডিও করা যাচ্ছে, ভিডিও দেখা যাচ্ছে, রেডিও ,টেলিভিশনও দেখা যাচ্ছে। কম্পিউটার এর মতো ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশ্বের খবর জানতে পারবে। স্মার্টফোন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে সমৃদ্ধ করছে বলা যায়। ৩জি মোবাইল ফোনের সাহাযে সরাসরি কথা বলা সহ উভয়ে উভয়ের ছবি ও দেখতে পারছে। মোবাইল ফোন ধীরে ধীরে বুদ্ধিমান একটা যন্ত্রে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমানে একটি আধুনিক মোবাইল ফোনকে স্মার্টফোন বলা হচ্ছে।

৯।ই-বুক রিডার সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: আমরা এখন কাগজে ছাপা বইয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু খুব দ্রত ই-বুক কাগজে ছাপা এ বইগুলোর জায়গা দখল করে নিতে যাচ্ছে। পৃথিবীর যাবতীয় বই ই-বুক আকারে সংরক্ষিত থাকবে এবং একজন সেই বইগুলো তার ই-বুক রিডারে ডাউনলোড করে নিতে পারবে। এক সময় বই একজন মানুষকে শূধু যে কয়টা বই বহন করতে পারত সে কয়টা বই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এখন মানুষ যে কোনো মুহুর্তে ইন্টারনেটের কারণে লক্ষ লক্ষ বইয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ইচ্ছে করলে যে কেউ পকেটে একটি বই নয় আস্ত একটা লাইব্রেরি রেখে দিতে পারবে।একজনের পক্ষে একশ বই কেনা সম্ভব না হতে পারে। কিন্তু খুবই কম খরচে সে ই-বুক রিডারের বইগুলো সংগ্রহ করে রাখতে পারে। একজন শিক্ষার্থী তার অসংখ রেফারেন্স বই এই ই-বুক রিডারের রেখে দিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য নিতে পারে।

১০।তোমার বিজ্ঞান বইট হারিয়ে গেলে সহজে তুমি বইটি কীভাবে পেতে পার বর্ণনা কর।
উত্তর:বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যপকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে। এর একটি হলো কাগজের বই এর ই-বুক ভার্সন। এ ই-বুকগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত থাকে। আমরা আমাদের প্রয়োজন মতো নামাতে পারি ও পড়তে পারি। বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের ই-বুক ভার্সন ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করে রেখে দিয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড  এর ওয়েবসাইট (www.nctb.gov.bd)  এমন একটি ওয়েবসাইট। এখানে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের পিডিএফ ফাইলটি সংরক্ষিত আছে যা সহজে ডাউনলোড করা যায়। বাংলাদেশ সরকারের আরেকটি ওয়েবসাইট হলো (www.ebook.gov.bd)  এখান থেকেও আমরা সহজে বিভিন্ন শ্রেণির ই-বুকগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারি। সুতরাং আমার বিজ্ঞান বইটি হারিয়ে গেলে উক্ত দুটি ওয়েবসাইট থেকে যে কোন একটি থেকে আমি বইটি ডাউনলোড করে নিতে পারি। প্রয়োজনে ডাউনলোড করা বইটি প্রিন্ট করে বাঁধিয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে পারি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন